স্টিকি পোস্ট টা দেখে ফেবু পেজ গুলো ঘুরে কিছু উত্তর দেয়ার চেষ্টা করলাম।
এই সেই মহান মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি বিজড়িত বাংলাদেশ বিখ্যাত আব্দুর রহমান হল। যখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হল গুলোতে চলেছিল নারকীয় হত্যাকাণ্ড, নিরবে পুরো বিশ্ববিদ্যালয় আত্মসমার্পন করেছিল পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর কাছে, ঠিক সেই কাল রাতে প্রতিশোধের নেশায় আব্দুর রহমান হলের ছাত্ররা রক্ত শপথ করে মহান মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতি বিজড়িত এই আব্দুর রহমান হল। ১৯৭৩ সালে প্রধান মন্ত্রি থাকা কালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আব্দুর রহমান হল পরিদর্শনে আসেন। এসে হারিয়ে যান তার মুক্তিযুদ্ধ জয়ী বীর ছাত্র দের মাঝে। ঘোষণা দেন জগন্নাথ কে পুর্নাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় করার।১৯৮৬ সাল থেকে শুধু "তত্ত্বাবধানে পুলিশ" লিখে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যতম বড় "আব্দুর রহমান হল" দখল করে রেখেছে পুলিশরা। অথচ এই পুলিশ দেওয়া হয়েছিল খালি হল পাহারা দিয়ে রক্ষা করার জন্য। কিন্তু আফসোস যারা এক সময় এই হল এর নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত ছিল তারাই আজ হল দখল করে বসে আছে। আজ রক্ষক এখানে ভক্ষক।
এই হলের গ্যাস বিল, বিদ্যুৎ বিল, পানির বিল আর অন্যান্য ট্যাক্স বহন করে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, আর থাকে পুলিশ্, যারা এক সময় এই হল এর নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত ছিল......
তথ্যসুত্রঃ প্রফেসর ওয়াকেফ হাসান, সাবেক প্রভোস্ট/সুপারিন্টেনডেন্ট, আব্দুর রহমান হল, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের দখলে থাকা অন্যতম হল বানী ভবন। হলটির অভ্যন্তরে ২০০ বছরের পুরনো একটি মন্দির আছে। হলটি হিন্দু ছাত্রদের জন্য বরাদ্দ ছিল। কিন্তু বিগত জামাত জোট সরকারের আমলে সাম্প্রদায়িক প্রতিহিংসার এক নগ্ন থাবায় হলটি থেকে হিন্দু ছাত্রদের নামিয়ে দেন তৎকালীন ছাত্রদল নেতা সগির আহমেদ। হলটি বেদখল হবার পূর্ব মুহূর্তে ছাত্রদের আন্দোলনের মুখে প্রশাসন হলটি উদ্ধার করে। কিন্তু এর বড় একটি অংশ বেদখল হয়ে যায়। বর্তমানে হলটিতে কর্মচারীরা বসবাস করছে। এই স্থানে নতুন হল নির্মাণের জন্য সরকার ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ দিলেও প্রশাসনের গাফেলতিতে হল নির্মাণ কাজ শুরু করা সম্ভব হচ্ছে না।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের দখলে থাকা অন্যতম হল হল হাবিবুর রহমান হল। প্রায় ২৫ অবৈধ দখলদারদের দখলে থাকার পর গত ২০১০ সালে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন হলটি পুনরায় উদ্ধার করে। বংশাল থানার পিছনে হলটির অবস্থান। বর্তমানে সরকারী বিধিনিষেধ এর কারণে হলটির পুরাতন স্থাপনা ভেঙ্গে নতুন ভবন করা সম্ভব হচ্ছেনা। যে কেউ চাইলে হলটি দেখে আসতে পারেন।
আমাদের জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যতম বড় হল তিব্বত হল। হলটি আহসান মঞ্জিলের ঠিক সামনে অবস্থিত। হলটিতে সন্ত্রাসী হামলার কারণে ১৯৮৫ সালের দিকে প্রশাসন হলটিকে খালি করে দেয়। এবং নিরাপত্তার জন্য কোতোয়ালি থানা পুলিশ নিযুক্ত করে। কিন্তু প্রশাসনের দুর্বলতা, জীবনের নিরাপত্তার অভাব ও রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে জগন্নাথের ছাত্ররা হলটিতে উঠতে সাহস পায়নি। এই সুযোগে পুলিশরা হলটিতে স্থায়ীভাবে আবাস গড়ে। কিন্তু ছাত্রদের আন্দোলনের কারণে ২০০৯ সালে পুলিশরা হলটি ছেড়ে দেয়। কিন্তু জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের অবহেলার কারণে হাজী সেলিম জাল দলিল করে হলটি দখল করেন। বর্তমানে হলটির জায়গায় মার্কেট নির্মাণ করা হয়েছে। তবে আশার কথা হল সরকার পরিবর্তন হলে এই বিশাল হলটি আমাদের পাওয়ার সুযোগ রয়েছে।
এটি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব মালিকানাধীন হল। এটি পাটুয়াটুলি রোডে অবস্থিত। এই হলটির নাম ছিল ক্রাউন হল/ পাটুয়াটুলি হল। যারা অগ্রণী ব্যাংকের গলি দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশ করেন তারা প্রতিদিনই এই হলটি কে দেখেন। বর্তমানে এটি ক্রাউন মার্কেট নামে পরিচিত। হলটি প্রয়াত ছাত্রদল নেতা সগির আহমেদ জাল দলিল করে বিক্রি করে দেন। এই ঘটনার সাথে তৎকালীন কলেজের অধ্যক্ষ আয়েশা শিরিন রহমান জড়িত ছিলেন বলে জানা যায়। তবে ২০০৭ সালে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন দখলদারদের কাগজ-পত্র ভুয়া বলে নিশ্চিত করে, কিন্তু প্রশাসনের উদাসীনতার কারণে হলটিতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নিয়ন্ত্রন প্রতিষ্ঠা করতে বার্থ হয়।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সবচেয়ে কাছের এই হলটি বিগত বি,এন,পি জোট সরকার আমলে বেদখল হয়। তখন এই হলটিতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারীরা থাকতেন। ছাত্রদল নেতা সগির আহমেদ সহ কতিপয় নেতা কর্মচারীদের জোর করে নামিয়ে দিয়ে হলটি বেদখল করে। এই হল দখলের ভাগাভাগিতে নিহত হন সগির।বর্তমানে হলটির জায়গায় মার্কেট, ফটোকপির দোকান এবং একটি টাওয়ার গড়ে তোলা হয়েছে।
(তথ্য সুত্রঃ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ফেবু পেজ)
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের হল গুলো বেদখল হবার পেছনের কিছু ঘটনা
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
Tweet
২২টি মন্তব্য ২২টি উত্তর
আলোচিত ব্লগ
শ্রমিক সংঘ অটুট থাকুক
আপনারা যখন কাব্য চর্চায় ব্যস্ত
অধিক নিরস একটি বিষয় শান্তি ও যুদ্ধ নিয়ে
আমি তখন নিরেট অলস ব্যক্তি মেধাহীনতা নিয়ে
মে দিবসের কবিতা লিখি।
“শ্রমিকের জয় হোক, শ্রমিক ঐক্য অটুট থাকুক
দুনিয়ার মজদুর, এক হও,... ...বাকিটুকু পড়ুন
কিভাবে বুঝবেন ভুল নারীর পিছনে জীবন নষ্ট করছেন? - ফ্রি এটেনশন ও বেটা অরবিটাল এর আসল রহস্য
ফ্রি এটেনশন না দেয়া এবং বেটা অরবিটার
(ভার্সিটির দ্বিতীয়-চতুর্থ বর্ষের ছেলেরা যেসব প্রবলেম নিয়ে টেক্সট দেয়, তার মধ্যে এই সমস্যা খুব বেশী থাকে। গত বছর থেকে এখন পর্যন্ত কমসে কম... ...বাকিটুকু পড়ুন
প্রতিদিন একটি করে গল্প তৈরি হয়-৩৭
ছবি-মেয়ে ও পাশের জন আমার ভাই এর ছোট ছেলে। আমার মেয়ে যেখাবে যাবে যা করবে ভাইপোরও তাই করতে হবে।
এখন সবখানে শুধু গাছ নিয়ে আলোচনা। ট্রেনিং আসছি... ...বাকিটুকু পড়ুন
একাত্তরের এই দিনে
শহীদুল ইসলাম প্রামানিক
আজ মে মাসের এক তারিখ অর্থাৎ মে দিবস। ১৯৭১ সালের মে মাসের এই দিনটির কথা মনে পড়লে এখনো গা শিউরে উঠে। এই দিনে আমার গ্রামের... ...বাকিটুকু পড়ুন
হুজুররা প্রেমিক হলে বাংলাদেশ বদলে যাবে
তখন প্রথম বর্ষের ছাত্র। আমরা কয়েকজন বন্ধু মিলে আমাদের আরেক বন্ধুর জন্মদিনের উপহার কিনতে গেছি মৌচাক মার্কেটের পিছনে, আনারকলি মার্কেটের সামনের ক্রাফটের দোকানগুলোতে। একটা নারীর ভাস্কর্য দেখে আমার... ...বাকিটুকু পড়ুন